অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি
অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কী ?
সমাজে মানুষের সম্পত্তির অধিকার, উৎপাদন পদ্ধতি, বিনিময় পদ্ধতি, বন্টন পদ্ধতি, ভোগ পদ্ধতি বা ভোগ ক্ষেত্রে স্বাধীনতা, শ্রম নিয়োগ, ব্যবসায়-বাণিজ্যের গতি প্রকৃতি, প্রভৃতি বিষয়ে অর্থনৈতিক কার্যাবলী সম্পাদনে প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনগত কাঠামো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনগত কাঠামোকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলা হয়।
সংক্ষেপে
প্রত্যেক সমাজ বা দেশের মানুষের অর্থনৈতিক কার্যাবলীকে কেন্দ্র করে নানারূপ সামাজিক ও আইনগত রীতিনীতি গড়ে উঠে, এই রীতিনীতির প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলে।
- •ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি (Capitalistic Economy)
- •নির্দেশমুলক / সমাজতান্ত্রিক / পরিকল্পিত অর্থনীতি (Command / Socialistic / Planned Economy)
- • মিশ্র অর্থনীতি (Mixed Economy)
- •ইসলামি অর্থনীতি (Islamic Economy)
ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি (Capitalistic Economy)
এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, যেখানে উৎপাদনের উপকরণগুলোর ওপর ব্যক্তিমালিকানা বজায় থাকে। উৎপাদন, বিনিময় ও ভোগসহ সমাজের সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যক্তিগত উদ্যোগে সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বয়ংক্রিয় দাম ব্যবস্থা ও অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ভোগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তি পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে। এ ধরনের অর্থব্যবস্থাকে অবাধ বা মুক্ত অর্থনীতিও বলে।
ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য
সম্পদে ব্যক্তিগত মালিকানা
সম্পদের উপর ব্যক্তির নিরঙ্কুশ মালিকানা বজায় থাকে।
মুনাফা অর্জন
সকল অর্থনৈতিক কার্য্যক্রমের উদ্দেশ্যই হলো ব্যক্তিগত মুনাফা অর্জন।
অবাধ প্রতিযোগীতা
সকল ক্ষেত্রে (উৎপাদন, দাম নির্ধারন, চাহিদা, যোগান) প্রতিযোগিতা বিদ্যমান থাকবে।
পছন্দ ও উদ্যোগের স্বাধীনতা
উদ্যোগের স্বাধীনতাতে সরকারি হস্তক্ষেপ বাঞ্চনীয় নয়।
ভোক্তার সার্বভোমত্ব
ভোক্তাই সম্রাট। সরকার ভোক্তার পছন্দকে নিয়ন্ত্রন করবে না।
স্বয়ংক্রিয় দাম ব্যবস্থা
ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পারিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দ্বারা বাজারে দাম নির্ধারিত হয়।
পুঁজিপতি ও শ্রমিকশ্রেনীর অস্তিত্ত্ব
মুনাফাভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থার ফলে পুঁজিপতিদের হাতে সম্পদ পুঞ্জিভুত হয় বলে শ্রমিকশ্রেনীও সৃষ্টি হয়।
একক উদ্যোগ
উদ্যোক্তা নিজ স্বার্থে বা পছন্দে উৎপাদন করে
সরকারের সীমিত ভুমিকা
এরূপ অর্থনীতির কার্যপরিচালনার জন্য বস্তুতপক্ষে সরকারের কোন ভুমিকা নেই।
শ্রেনী বিভক্তি
সমাজে শ্রেনী বিভাজন (নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত, ইত্যাদি) তৈরি হয়।
আয়-বন্টনের অসমতা
যার সম্পদ যত বেশি, আয়ও তত বেশি হওয়ায় আয় বন্টনে অসমতা দেখা যায়।
মুলধন রপ্তানি
মুলধন বিদেশে রপ্তানি করতে পারে, বা বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারে।
বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থা
বড় বড় শিল্প কারখানার বিকাশ ঘটে।