L007 বিভিন্ন অর্থব্যবস্থা থেকে বোর্ড প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা

A দেশে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান। কেননা এখানে সকল কিছু ব্যক্তিমালিকানায় উৎপাদন ও বিক্রি করা হয়।

B দেশে মিশ্র অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান। কারণ এখানে সরকারি ও ব্যক্তিগত উভয় খাতে দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদিত ও বিক্রি হয়।

C দেশে সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান। এটা A দেশের বিপরীত। এখানে সব কিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন ও বিক্রি হয়।

ঘ নং প্রশ্নের সমাধানঃ

আমরা জানি, ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা ও সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার গুণগুলো গ্রহণ করে এবং দোষগুলো পরিত্যাগ করে গড়ে ওঠে মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। সুতরাং এখানে একই সাথে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অস্তিত্ব বা প্রাধান্য থাকে। যার ফলে একই সাথে সামাজিক কল্যাণ ও জনকল্যাণ এবং  মুনাফা অর্জন সহজ হয়। এছাড়া শ্রেণিবৈষম্য ও বেকারত্বের হার  কম থাকে। ফলে আমরা বলতে পারি ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার তুলনায় দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই উত্তম। এছাড়া মিশ্র অর্থব্যবস্থার আরও অন্যান্য যে সকল বৈশিষ্ট্য আছে সেগুলির উপর ভিত্তি করে পরীক্ষার খাতায় উত্তর দিতে হবে।

গ নং প্রশ্নের সমাধানঃ

A দেশে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান। কেননা এই দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাত সহ সকল খাতই ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত হয় এবং অবাধ প্রতিযোগীতার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারিত হয়।

ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার তিনটি বৈশিষ্ট্য নিচে দেয়া হলোঃ

১) ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় সকল সম্পদের মালিকানা ব্যক্তির, রাষ্ট্রের কোনো মালিকানা থাকে না। উৎপাদনের উপকরণ সমূহের ব্যক্তিমালিকানা আইনের দ্বারা স্বীকৃত।

২) স্বয়ংক্রিয় দাম ব্যবস্থার দ্বারা ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় বাজার ব্যবস্থা পরিচালিত হয়।

৩) মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যেই ধনতন্ত্রে উৎপাদনের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।

গ নং প্রশ্নের সমাধানঃ

উদ্দীপকের আলোকে উদ্যোগের স্বাধীনতা, উৎপাদন ও ব্যাবসা পরিচালনা এবং অবাধ সুযোগ-সুবিধা ভোগ, ইত্যাদি এই বিষয়গুলো ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থাকে নির্দেশ করে।

ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা হচ্ছে, এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, যেখানে উৎপাদনের উপকরণগুলোর ওপর ব্যক্তিমালিকানা বজায় থাকে। উৎপাদন, বিনিময় ও ভোগসহ সমাজের সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যক্তিগত উদ্যোগে সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বয়ংক্রিয় দাম ব্যবস্থা ও অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ভোগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তি পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে। এ ধরনের অর্থব্যবস্থাকে অবাধ বা মুক্ত অর্থনীতিও বলে।

ঘ নং প্রশ্নের সমাধানঃ

উদ্দীপকের আলোকে সুদ, ঘুষ, মজুতদারি নিষিদ্ধ ও যাকাত ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক ইসলামী অর্থব্যবস্থায় দেখা যায়।

ইসলামি অর্থনীতি হচ্ছে একটি সামাজিক বিজ্ঞান যা ইসলামের আলোকে মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যাবলি আলোচনা করে।

তুরুস্কের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড.সাবাহ ইলদীন জাইমের মতে, “ ইসলামি অর্থনীতি বলতে ইসলামি শরীয়তের দৃষ্টিতে মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যা ও তাঁর আচরণের সুসংবদ্ধ বিশ্লেষণ ও অধ্যয়নকে বোঝায়।

ব্যক্তি জীবনে যে সব বিষয় অতি স্বার্থপরতা আত্মচিন্তার জন্ম দেয়, তা নিরুৎসাহিত করার জন্য ইসলামী অর্থনীতিতে সুদ, ঘুষ, মদ , জুয়া, মজুতদারি, কালোবাজারি, অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন, চুরি, ইত্যাদি মাধ্যমে সম্পদের মালিক হওয়াকে সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইসলামে ধনীদের নিকট থেকে অর্থ আদায় করে তা দরিদ্র জনগণের মধ্যে বন্টনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাকাত এর মাধ্যমে। এই যাকাত প্রদান ফরয বা বাধ্যতামূলক। এটি ইসলামী অর্থব্যবস্থার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *